মনে পড়ে সেই সোনালী
মার্চের কথা,
বলতে গেলে ভেসে ওঠে
অনেক ব্যথা।
.
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে
ভেসে ওঠে বাঙ্গালির হাহাকার,
স্মৃতিতে ধরে রাখা না যায়
তাই কান্না আসে বারং বার।
.
২৮শে ফেব্রুয়ারী ঘোষণা দিলেন
জেনারাল ইয়াহিয়া খান,
৩রা মার্চ পর্যন্ত অধিবেশন স্তগিত রাখার দাবী করেছেন
জুলফিকার আলী ভুট্টোর অনুদান।
.
নেতৃবৃন্দ ব্যাস্ত ছিলেন
বিভিন্ন কাজ ও খসড়া তৈরীতে,
মেনে নিতে পারলেন না
তাদের এই দাবী কোনো ভাবেতে।
.
২রা মার্চ শুরু হয় হরতাল
বাংলার মাটিতে,
৬ মার্চ পর্যন্ত চলতে থাকে
হরতাল, কারফিউ ও মিছিলে।
.
মারা গেছেন মিছিলে কত
ছাত্র - জনতা হানাদার বাহিনীর গুলিতে,
ভাংচুর না করে তারা
জিবন দিলেন নিজ দেশেতে।
.
৩রা মার্চ ভুট্টোর নিন্দা করেন
পাঞ্জাব -পাকিস্তান ফ্রন্ট,
তারা আহ্বান করেন
বাংলার জনগনের অত্যাচার বন্ধ হোক।
.
৪ঠা মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষনা করলেন
সরকারী ও আধা সরকারী কর্মচারীদের বেতন দিতে,
বেতন সর্বোচ্চ ১৫শত টাকা নির্ধারন করে বলছেন
ব্যাংক খোলা রাখতে।।
.
৫ই মার্চ মার্সাল ল অথরিটি
করেছিলেন আবদার,
সেনাবাহিনীকে যেতে হবে ব্যারাকে
দেশব্যাপি আন্দোলন হতে থাকে আরও জোরদার।
.
৬ই মার্চ আন্দোলনরত জনগনের প্রতি
জানাতে সমর্থন,
যোগ দিতে শুরু করলেন
সরকারী কর্মচারীগন।
.
৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে
বঙ্গবন্ধু লাখো জনতার ভীড়ে,
রাষ্ট্র-রাজনীতি কত গভীর প্রজ্ঞা তা বোজালেন
ইতিহাস কাঁপানো মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষনে।
.
এই দিন বঙ্গবন্ধু উচ্চারন করে গেলেন
বাংলার চাওয়া পাওয়ার সততা,
দীপ্ত কন্ঠে বলে গেলেন
বাঙ্গালীর দুঃখ কষ্টের কথা।
.
এই দিন থেকে শুরু হল
স্বাধীনতার সংগ্রাম,
পরাধীনতা মানবো না
এটাই আমাদের অভিমান।
.
৮ই মার্চ ঘোষনা করা হয়
ছাত্রলীগ নাম,
স্বাধীন বাংলার একমাত্র
ছাত্র সংগ্রাম।।
.
৯ই মার্চ পল্টন ময়দানে ভাষন দিলেন
মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী,
ইয়াহিয়াকে বলেন-বারাবারি না করে শুনে রাখো
লাকুম দিনুকুম আলিয়াদ্বীন...
(তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার)।
.
পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স¦ীকার করে নাও
তিক্ততা বাড়াই লাভ নেই আর,
বারাবারি করলে ১৪ দফা আন্দোলন শুরু করে দিব
বঙ্গবন্ধুর সাথে মিলিত হয়ে এবার।
.
১০ই মার্চ সরকারী ও আধা সরকারী সংস্থার প্রতি
নির্দেশাবলি পেশ করেন,
আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে
তাজউদ্দিন আহমেদ...
.
১১ই মার্চ ছাত্র ইউনিয়ন কতৃক জানানো হয়
পূর্ব বাংলা কায়েমের সংগ্রামের আহ্বান,
গনতান্ত্রিক সংগ্রাম শক্তির একতা
জোর আওয়াজ তুলুন...
.
রাজনৈতিক প্রচার অব্যাহত রাখুন
শক্তির মোকাবেলাতে প্রস্তুত থাকুন,
দাঙ্গা-হাঙ্গামা উস্কানী প্রতিরোধ করুন
শান্তি - শৃঙ্খলা নিজ উদ্যেগে বজায় রাখুন।।
.
১৩ই মার্চ সমর্থনে আসেন
আওয়ামীলীগের প্রতি জাতীয় পরিষদের
সংখ্যালঘিষ্ট দল...
.
১৮ই মার্চ ঢাকায় আসেন ইয়াহিয়া খান
বঙ্গবন্ধুর সম্মুখে ঘোষণা দেন,
সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন
করতে নাহি পারবেন।।
.
১৮ই মার্চ ১৬ দিন পর্দাপন করে
শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন,
ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনের ঢেউ
গ্রাম-শহর ও প্রান্তর।।
.
২০ই মার্চ শামসুল হকের নেতৃত্বে
ইষ্ট বেঙ্গল রেজিম্যান্টের একটি ব্যাটালিয়ান,
হাতিয়ার ছিনিয়ে নেয়ার সংগ্রামে
টঙ্গী- জয়দেবপুর মোড়ে ব্যারিকেড গড়ে তোলেন।
.
২২শে মার্চ গর্জে উঠে
বাঙ্গালির সংগ্রাম,
‘‘জয় বাংলা’’ শ্লোগানে মুখরিত
হাজার হাজার মানুষের মুখের ভাষণ।।
.
২৩শে মার্চ পাকিস্তানের
জাতীয় দিবস পালন করেন,
আওয়ামীলীগ প্রতিরোধ দিবসের
কল্পকাহিনী হিসেবে...
.
২৫শে মার্চ ভেঙ্গে যায় আলোচনা
ইয়াহিয়া ও ভুট্টো গোপনে পাকিস্তানে চলে গিয়ে,
বাংলার প্রতি ঘটে সম্পূর্ণ অবমাননা...
.
এই দিনে শেখ মুজিবকে বন্দি করে
নিয়ে যাওয়া হয় করাচিতে,
পাকিস্তানি বাহিনী আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে
সার্চলাইট চালাই মধ্যরাতে।
.
এ রাতে হত্যা করা হয় সাত হাজার জনকে
গ্রেফতার করা হয় তিন হাজার জনকে,
বাড়তে লাগলো মৃতেল সংখ্যা
পুড়তে লাগলো ঘর বাড়ি সহ অনেক।
.
এ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার
হত্যা, জ্বালা-পোড়া আরও কত কি,
গ্রেফতার সহ জ্বলছে ঢাকা
মরছে হাজার হাজার বাঙ্গালী।।
.
শুরু হল মুক্তিযুদ্ধ
স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে,
অধিবেশনের পরিবর্তে পাকিস্তান
কামান, ট্যাংক, গোলবারুদ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।।
.
এটিই ছিল পৃথিবীর জগন্যতম
একমাত্র গনহত্যা,
সাংবাদিক সহ কত জনকে
আটকিয়ে করতে লাগলো হত্যা।।
.
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা দেয়নি তার খবর
হৈ চৈ পরে যায় বিশ্বব্যাপি,
পাকিস্তান যে নষ্ট করেছে বাঙ্গালী
লে.জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজীর প্রমান উক্তি।।
(“ম্যায় ইস হারামজাদী কওম কি নাসল বদল দুঙ্গা = আমি এ জারজ জাতির বংশগতি বদলে দেব”).
.
এ মধ্য রাতে শেখ মুজিব গ্রেফতার হলেন
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে,
তিনিই এ রাতে একটি অনুবাদ রেখে যান
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রে।।
(এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন আপনাদের স্বর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদেও যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক)
.
২৬শে মার্চ এ পত্রটি মাইকিং করলেন
চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের ও কয়েকজন নেতা,
এম এ হান্নান, বেল্লাল মোহাম্মদ, আবুল কাশেম
পৌছিয়ে দিলেন সে কথা ...
.
চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষনা দিলেন
মেজর জিয়াউর রহমান,
আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন...
.
এ দিন জিয়া নিজেই বলেন
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান,
৭ই মার্চের ভাষনই ছিল তার
একমাত্র বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রাম।।
.
আজও কানে ভেসে উঠে
সে কামানের গুলিবিদ্ধ আগুন,
থমকে উঠি নিজে, নিরাস হয়ে যায় মন
কেমন জানি করে তখন।।
.
ত্রিশ লক্ষ মা বোনের রক্তের বিনিময়ে
পেয়েছি আমরা যে দেশ,
সেটাই আমাদের একমাত্র নাম
সবুজ শ্যামলিমার বাংলাদেশ।।
২২ ডিসেম্বর - ২০১৬
গল্প/কবিতা:
৬৯ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪